Blog Details

Blog Thumbnail

দেবতাখুম – পাহাড়ি নদীর বুকে এক নীরব জাদু

তখন জুলাইয়ের এক বর্ষামুখর দিন। বান্দরবনের থানচি থেকে আমরা কয়েকজন বন্ধু একটা লোকাল পিকআপে চেপে যাচ্ছি এক ‘অচেনা’ গন্তব্যে নাম শুনেছি, দেবতাখুম

এক স্থানীয় ট্রাভেলারের মুখে শুনেছিলাম, “ভাই, দেবতাখুম না দেখলে পাহাড়ের আসল রূপ বোঝা যায় না।”
এই কথাটাই মনে দাগ কেটে গিয়েছিল।

রেমাক্রি পেরিয়ে আরও ভেতরে, ঘন জঙ্গলের ভেতর দিয়ে হেঁটে, কখনও পাহাড় ডিঙিয়ে, কখনও খালের উপর বাঁশের সাঁকো পার হয়ে পৌঁছাই এক শান্ত জলধারার সামনে। সেইটাই ছিল দেবতাখুম

দুই পাশে বিশাল পাহাড়, মাঝখানে এক সরু জলপথ আর সেই পথটা এতটা শান্ত, এতটা গভীর, মনে হচ্ছিল যেন প্রকৃতির বানানো এক প্রাকৃতিক সুইমিং পুল!
পানি এতটাই সবুজ-নীল যে নিজেকেই যেন দেখতে পাচ্ছিলাম নিচে।

আমরা কাঠের ভেলা (স্থানীয় ভাষায় “ভেল”) তে উঠে পড়লাম। দু’জন স্থানীয় ছেলেপুলে ধীরে ধীরে ঠেলে আমাদের নিয়ে চললো। চারপাশে এক অপার্থিব নীরবতা। কেবল মাঝেমধ্যে পাহাড় থেকে পড়া বৃষ্টির পানি টুপটাপ শব্দ করে পড়ছে।

এক সময় মনে হলো এখানে কেউ নেই, কিছু নেই, কেবল আমি আর প্রকৃতি।
দেবতা যদি পাহাড়ে থাকতেন, তবে এমন জায়গাতেই থাকতেন, নামটা একদম ঠিকই রেখেছে দেবতাখুম

  • লোকেশন: বান্দরবন, থানচি থেকে রেমাক্রি, সেখান থেকে হেঁটে বা নৌকায় যেতে হয়।

  • কোন সময় যাবেন?: বর্ষা শেষে (আগস্ট–অক্টোবর) সময়টা সবচেয়ে ভালো—পানি থাকে বেশি, চারপাশে সবুজ।

  • কেন যাবেন দেবতাখুম?
    ➤ নির্জনতা
    ➤ রহস্যময় জলপথ
    ➤ ভেলা চড়ে পাহাড়ের ভেতর দিয়ে যাওয়ার অদ্ভুত অভিজ্ঞতা


🌿 ছোট একটা বার্তা...

দেবতাখুমে যাওয়ার সময় আমরা কিছু প্লাস্টিক নিয়ে এসেছিলাম (পানি, খাবার ইত্যাদি)। ফেরার সময় সেটা যত্ন করে ব্যাগে ভরে এনেছিলাম।

কারণ জায়গাটা এতটা পবিত্র আর নিখুঁত লেগেছিল, মনে হচ্ছিল, একটা কাগজ ফেললেই যেন এই জাদুটা ভেঙে যাবে।